প্রাচীন ভারতে জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।
প্রাচীন ভারতে গুপ্তযুগে জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার উল্লেখযোগ্য উৎকর্ষ দেখা গিয়েছিল। প্রাচীন কালে (বিশেষত গুপ্ত যুগে) বিভিন্ন বিজ্ঞানী যেসকল তত্ত্ব আবিষ্কার করেছিলেন, তা বর্তমানে সর্বজন স্বীকৃত।
আর্যভট্ট: প্রাচীন ভারতের একজন প্রখ্যাত বিজ্ঞানী হলেন আর্যভট্ট। সূর্যসিদ্ধান্ত নামক গ্রন্থে তিনি প্রথম বলেন যে, পৃথিবী গোলাকার এবং সর্বদা সূর্যকে কেন্দ্র করে পৃথিবী তার নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘুরছে। এ ছাড়াও ৩৬৫ দিনে এক বছর, আহ্নিক গতি, বার্ষিক গতি, চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণের কার্যকারণ তিনি ব্যাখ্যা করেন। তাঁর 'আর্যভট্টীয়' গ্রন্থে তিনি গণিত ও জ্যোতির্বিদ্যার মধ্যেকার সম্পর্ক ও যুক্তিকে প্রমাণ করেছেন।
বরাহমিহির: প্রাচীন ভারতের অপর এক বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী হলেন বরাহমিহির। জ্যোতির্বিদ্যা সম্পর্কিত তার বিখ্যাত গ্রন্থ পঞ্চসিদ্ধান্তিকা। তাঁর অপর গ্রন্থ 'বৃহৎসংহিতা' যার মধ্যে সূর্য, চন্দ্র, পৃথিবী ও অন্যান্য গ্রহনক্ষত্রের অবস্থান সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। তিনি প্রাচীন গ্রিক জ্যোতির্বিদদের বিভিন্ন কাজ নিয়েও চর্চা করেন।
ব্রহ্মগুপ্ত: ব্রহ্মগুপ্ত ছিলেন প্রাচীন ভারতের একজন প্রখ্যাত গণিতজ্ঞ জ্যোতির্বিদ। তিনি 'ব্রহ্মস্ফুটসিদ্ধান্ত' গ্রন্থটি রচনা করেন। এই গ্রন্থে বিভিন্ন গ্রহের অবস্থান, সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণের কারণ প্রভৃতি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। খণ্ডখাদ্যক গ্রন্থে তিনি পৃথিবী ও চন্দ্রের মধ্যেকার দূরত্ব এবং সেই দূরত্বের বৃদ্ধি ও হ্রাসের কারণও বর্ণনা করেন।
মূল্যায়ন: প্রাচীন ভারতের জ্যোতির্বিদ্যা চর্চায় আর্যভট্ট, বরাহমিহির, ব্রহ্মগুপ্ত প্রমুখের অবদান চিরস্মরণীয়। এ ছাড়াও নবম-দশম শতকে শ্রীধর, মঞ্জুল প্রমুখ জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চায় উল্লেখযোগ্য স্বাক্ষর রাখেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন for "প্রাচীন ভারতে জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।"