'কোপারনিকাসের বিপ্লব' কী? ('Copernican Revolution').
রেনেসাঁ কালপর্বের প্রখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী কোপারনিকাসকে আধুনিক জ্যোতির্বিদ্যার জনক বলে অভিহিত করা হয়। মহাবিশ্বের গঠন সম্পর্কে তাঁর মতবাদ এক আমূল যুগান্তর আনে। তিনি প্রথম সূর্যকেন্দ্রিক বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের তত্ত্ব প্রমাণ করেন।
পৃথিবীকেন্দ্রিক বিশ্বব্রহ্মাণ্ড তত্ত্ব:
প্রাচীন কাল থেকে শুরু করে পঞ্চদশ শতক পর্যন্ত ইউরোপে মহাবিশ্ব সম্পর্কে টলেমীয় ও অ্যারিস্টট্লীয় ধারণা প্রচলিত ছিল। এতে বলা হয়েছিল যে-বিশ্বব্রহ্মান্ডের কেন্দ্রস্থলে অবস্থান করছে পৃথিবী এবং পৃথিবীকে কেন্দ্র করে সূর্য, চন্দ্র ও অন্যান্য গ্রহনক্ষত্র আবর্তন করছে।
সূর্যকেন্দ্রিক বিশ্বব্রহ্মাণ্ড তত্ত্ব:
১৫৪৩ খ্রিস্টাব্দে কোপারনিকাস তাঁর 'De Revolutionibus Orbium Coelestium' (জ্যোতিষ্কসমূহের কক্ষপথের আবর্তন) নামক গ্রন্থে বলেন যে, বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের কেন্দ্রে পৃথিবী নয়, সূর্য অবস্থান করছে এবং পৃথিবীসহ অন্যান্য সব গ্রহ-উপগ্রহগুলি নির্দিষ্ট বৃত্তাকার কক্ষপথে সূর্যকে আবর্তন করে চলেছে। তাঁর এই তত্ত্ব সমস্ত প্রাচীন ধারণা, এমনকি খ্রিস্টান চার্চের প্রচারিত বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সম্পর্কিত ভ্রান্ত ধারণাকে ভেঙে দেয় এবং জ্যোতির্বিদ্যা চর্চায় নতুন দিগন্ত প্রসারিত করে। তাই এই ঘটনা কোপারনিকান বিপ্লব বা কোপারনিকাসের বিপ্লব নামে খ্যাত।
মূল্যায়ন:
কোপারনিকাসের জীবিতকালে খুব কম জ্যোতির্বিজ্ঞানই তাঁর তত্ত্বকে বিশ্বাস ও সমর্থন করেছিলেন। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পর - জিওরদানো ব্রুনো, কেপলার, নিউটন প্রমুখ বিজ্ঞানী কোপারনিকাসের প্রদর্শিত পথেই জ্যোতির্বিদ্যা চর্চার এক বৈপ্লবিক রূপান্তর ঘটিয়েছিলেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন for "'কোপারনিকাসের বিপ্লব' কী? ('Copernican Revolution')."